Sunday, December 13, 2009

মার্কিন প্রেসিডেণ্ট বারাক ওবামা

যুদ্ধের আগুনে ভারত সীমান্ত নতুন করে উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেণ্ট বারাক ওবামা আফগানিস্তানে যুদ্ধ জোরালো করে তুলবেন, সে যুদ্ধ প্রসারিত করবেন পাকিস্তানেও। তঁার নবঘোষিত আফপাক সমরনীতির অঁাচ ভারতকে পোহাতে হবেই।

আমেরিকা আট বছর ধরে যুদ্ধ চালাচ্ছে আফগানিস্তানে। সে যুদ্ধে চূড়ান্ত জয় বা চূড়ান্ত পরাজয় কোনওটাই হয়নি। শুধু আফগানিস্তানেই যুদ্ধ সীমাবদ্ধ রাখলে কোনও দিনই আমেরিকার পক্ষে জয়লাভ সম্ভব হবে না–প্রেসিডেণ্ট ওবামা ক্ষমতায় এসেই তা বুঝেছিলেন। সে জন্যই তিনি ওই Öুদ্ধের সঙ্গে পাকিস্তানকে জড়িয়ে, তঁার আফপাক নীতি ঘোষণা করেছিলেন। সে নীতি সফল হয়নি বলেই ২ ডিসেম্বর ওবামা তঁার নতুন নীতি ঘোষণা করেছেন।

তঁার আগের আফপাক নীতিতেও ভারতের কথা ছিল না, এ বারও নেই। কিন্তু, আফগানিস্তানে ভারতের কয়েক হাজার সৈন্য মোতায়েন আছে, বিরাট আকারের গঠনমূলক কাজও সেখানে ভারত করছে। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার দাবি আমেরিকাতে প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সি প্রেসিডেণ্ট ওবামাকে জানিয়েছিলেন, ভারত আফগানিস্তান থেকে নড়বে না। সেখানে যে কাজ ভারত শুরু করেছে, তা চালিয়ে যাওয়া হবেই।

প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিয়ের এই কথায় প্রেসিডেণ্ট ওবামা মনোবল পেয়েছেন। সে জন্যই আফগানিস্তানে যুদ্ধ আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত তিনি নিতে পেরেছেন। সেখানে ৬৮ হাজার আমেরিকান সৈন্য যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশ, যথা িব্রটেন, ফ্রন্স, ইতালি ইত্যাদিও সেনা পাঠিয়েছে। তারা একযোগে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়ছে। কিন্তু, আফগানিস্তানে ভারতীয় সৈন্যরা যুদ্ধ করছে না। তারা শুধু ওই দেশে গঠনমূলক কার্যে নিযুক্ত ভারতীয় অসামরিক কমর্ীদের নিরাপত্তার দায়িেত্ব আছে।

কিন্তু, গঠনমূলক কাজও যুদ্ধের অঙ্গ। সেই হিসাবে আফগানিস্তানে ভারত আমেরিকার সহযোগী। এ জন্যই প্রেসিডেণ্ট ওবামা তঁার নতুন আফপাক নীতি নির্ধারণের আগে মনমোহন সিয়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন। পাকিস্তান তাতে ক্ষুব্ধ

আফগানিস্তানে ভারতের সহযোগিতার গুরুত্ব কতটা, তা আমেরিকা বোঝে। ২০০৬ সালের শেষ দিকে দু’ জন আমেরিকান সেনাকর্তা, জেনারেল ডেভিড পেট্রাইউস এব জেনারেল জেমস এফ অ্যামোস ‘‘আর্মি/মেরিন কোর ফিল্ড ম্যানুয়াল ৩২৪’’ নামে একখানি বই প্রকাশ করেন। সে বইয়ে আফগানিস্তানে ও ইরাকে পুরানো যুদ্ধনীতি পালটে কোন নতুন যুদ্ধনীতি নিতে হবে, তা বিশদভাবে আলোচনা করেছিলেন। আমেরিকা ওই নতুন নীতি গ্রহণ করেছে।

আফগানিস্তানে শুধু যুদ্ধের দ্বারা শত্রুকে পরাস্ত করা যাবে না, এই হল পেট্রাইউসঅ্যামোসের যুদ্ধাভিজ্ঞতার নির্যাস। তঁারা বলেছেন, যুদ্ধ চালাতে হবে, কিন্তু সেই সঙ্গে আফগানদের মন জয়ও করতে হবে। উত্তম প্রশাসন দিতে হবে, রাস্তাঘাট, স্কুল, হাসপাতাত্ম গড়তে হবে। আদালত প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আইনের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে হবে ইত্যাদি।

এই নয়া নীতিকে বলা হয়েছে Comprehensive Counter-insurgency (COIN) বা সর্বাঙ্গীণ বিদ্রোহবিরোধিতা। ওবামা ক্ষমতায় এসেই এই নয়া যুদ্ধনীতি মেনে নিয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত তঁার মত পালটায়নি। কিন্তু, তঁার প্রশাসন বলছে, আফগানিস্তানে একই সঙ্গে যুদ্ধ চালানো ও গঠনমূলক কাজ করে যাওয়া–তাও বছরের পর বছর–আমেরিকার পক্ষে সম্ভব নয়। কেননা, আমেরিকার অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। পৃথিবীর সব চেয়ে ঋণী দেশ এখন আমেরিকা। কত ব্যয়ভার তারা বইতে পারে?

আফগানিস্তানে ভারত গঠনমূলক কাজের দায়িত্ব বহন করছে সানন্দে। এ ব্যাপারে পাকিস্তান বা অন্য কোনও দেশের সহযোগিতা আমেরিকা পায়নি। মনমোহন সি ওয়াশিটনে গিয়ে প্রেসিডেণ্ট ওবামাকে জানিয়েছেন, ভারত আফগানিস্তানে জনকল্যাণমূলক কাজ থেকে সরে আসবে না। ওবামা তাতে আশ্বস্ত হয়েছেন।

কিন্তু, পাকিস্তান হয়েছে অতিশয় ক্ষুব্ধ। কেননা, আফগানিস্তানে তাদের দূতাবাস ছাড়া আর কিছু নেই। সেখানে তাদের সৈন্য নেই, অন্য কাজকর্মও নেই। অন্য দিকে, ভারতের আছে ব্যাপক উপিস্থতি। তাই ক্রোধবশত তারা দু’ বার কাবুলে অবিস্থত ভারতের দূতাবাস আক্রমণের ব্যবস্থা করেছিল। তা ছাড়াও, ভারত বেলুচিস্তানে বিদ্রোহের উসকানি দিচ্ছে, বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও অর্থ সাহায্য দিচ্ছে, এই নালিশ বার বার জানাচ্ছে পাকিস্তান। তাদের প্রধানমন্ত্রী গিলানি বলেছেন, আফগান সীমান্ত থেকে বিদ্রোহী বালুচদের ভারত সাহায্য দিচ্ছে, সে সম্পর্কে তথ্য ও প্রমাণ তঁারা পেয়েছেন। তঁারা নাকি উপযুক্ত সময়ে সে সব প্রমাণ করবেন। তবে আপাতত করবেন না।

ভারতের এবিম্বধ ষড়যন্ত্রের সাক্ষ্য ও প্রমাণ প্রকাশ করতে পাকিস্তান কুিণ্ঠত কেন, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই। তবে, ওবামা প্রশাসন পাকিস্তানের এই অভিযোগকে ফঁু দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে।

কয়েক জন উচ্চ পদস্থ আমেরিকান ওবামাকে বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন, আফগানিস্তানে ভারতের উপিস্থতির অবসান ঘটানো দরকার, কেননা, পাকিস্তান তাতে খুশি হবে না। অথচ, সন্ত্রাসবাদ দমনের ব্যাপারে পাকিস্তান আমেরিকার মিত্রশক্তি। মিত্রের মন জোগাতে আফগানিস্তান থেকে ভারতকে পাততাড়ি গোটানোর নির্দেশ দিতেই হবে।

প্রেসিডেণ্ট ওবামা এই পরামর্শ অগ্রাহ্য করেছেন। আমেরিকার উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিরা আরও পরামর্শ দিয়েছিলেন, কাশ্মীর থেকে ভারতীয় ফৌজ সরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে হবে। কেননা, পাকিস্তানের মনস্তুিষ্টর জন্য সেটা প্রয়োজন। প্রেসিডেণ্ট ওবামা এই পরামর্শও প্রত্যাখ্যান করেছেন। কাশ্মীর সমস্যার ব্যাপারে আমেরিকা কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।

কিন্তু, পাকিস্তানে তিনি ঢেলে অর্থ ও অস্ত্র দিচ্ছেন। ভারত তাতে ক্ষুব্ধ। কারণ, পাকিস্তান অত্যাধুনিক যে সব অস্ত্র আমেরিকার কাছ থেকে আজ পর্যন্ত পেয়েছে, সে সব তারা ভারতের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করছে। এমনকী, কারগিল যুদ্ধেও তারা আমেরিকান অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল।

ভারতের আপত্তি সেত্ত্বও পাকিস্তানকে অর্থ ও অস্ত্র জোগানো থেকে আমেরিকা বিরত হবে না। বর, ওবামা ঘোষণা করেছেন, তিনি পাকিস্তানকে আরও বেশি ডলার দেবেন। তঁার শর্ত শুধু একটাই–পাকিস্তান থেকে তালিবান ও অন্য জঙ্গি সগঠনগুলিকে নিিশ্চহ্ন করে দিতে হবে।

পাকিস্তান এই শর্ত কিছুটা মানতে বাধ্য হয়েছে। তারা তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। তারা ওই যুদ্ধ চালাচ্ছে ওয়াজিরিস্তানে তথা আফপাক সীমান্ত ঞ্চলে। তালিবানের কিছু লোকজন তাতে মারা গিয়েছে বটে, কিন্তু পাক জওয়ানরাও প্রাণ হারিয়েছে। এ ভিন্ন অন্য ফল মেলেনি।

কারণ, আফগান সীমান্ত এলাকা থেকে তালিবানরা চলে এসেছে পাকিস্তানের অন্যান্য জায়গায়। ওই সীমান্ত এলাকায় েড্রান বিমানের সাহায্যে আমেরিকা বোমা বর্ষণ করছে। সে জন্যও ওই এলাকা ছেড়ে অন্যান্য এলাকায় আশ্রয় নেওয়া তালিবানদের দরকার ছিল।

যেমন, তালিবান নেতা মোল্লা ওমর দলবল সহ কোয়েটা এলাকায় বাস করছিলেন। সেখান থেকেই তিনি আফগানিস্তানে অপারেশন চালাচ্ছিলেন। এখন আমেরিকান েড্রান থেকে বালুচিস্তানের ওই এলাকায় বোমা ফেলা হচ্ছে বলে মোল্লা ওমর করাচিতে এসে উঠেছেন। করাচি পাকিস্তানের বন্দর নগরী তথা প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র। আমেরিকা আফগান যুদ্ধের জন্য রসদ পাঠায় করাচি বন্দর দিয়ে। অতি জনবহুল ওই নগরীর পর বোমা বর্ষণ করা চলে না। তাই আফগান তালিবানদের পক্ষে করাচি একটা নিরাপদ স্থান।

আমেরিকা আফগানিস্তানে তালিবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে, অথচ তাদের প্রধান নেতা মোল্লা ওমর সদলে করাচিতে ঘঁাটি গেড়ে বহাল তবিয়তে আছেন! পাকিস্তানের এই দু’মুখো নীতি ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আমেরিকার চাপে তারা পাকিস্তানের তালিবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, কিন্তু, আফগানিস্তানের তালিবানদের তারা মদত দিচ্ছে। উপরন্তু, পাকিস্তানে তালিবান ছাড়া আরও যে সব জঙ্গি সগঠন আছে, যথা ত্মস্করইতোইবা, জয়েশইমহম্মদ ইত্যাদি, তাদের কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না পাক সরকার। এটাই পাকিস্তানের দু’মুখো নীতি।

প্রেসিডেণ্ট ওবামা পাকিস্তানের দু’মুখো নীতি সম্পর্কে অবহিত। তিনি তঁার নতুন আফপাক নীতি ঘোষণা করে মঙ্গলবার ওয়েস্ট পয়েণ্টের মার্কিন মিলিটারি অাকাদেমি থেকে ৩৩ মিনিটের যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে বলেছেন, পাকিস্তান হল সন্ত্রাসবাদের এপিসেণ্টার। আফগানিস্তানে ৬৮ হাজার আমেরিকান সৈন্য থাকা সেত্ত্বও প্রেসিডেণ্ট ওবামা আরও ৩০ হাজার সৈন্য সেখানে পাঠাবেন। কিন্তু, তারা কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে পাকিস্তানের পর। কারণ, আফগানিস্তানের তালিবানদের নিরাপদ আশ্রয় জোগায় পাকিস্তান। পাক ভূমি থেকেই তালিবানরা আফগানিস্তানে অপারেশন চালায়। আফগানিস্তানের তালিবানদের সৃিষ্ট হয়েছিল পাকিস্তানের মাদ্রাসাগুলিতে। তাদের লালন পালন করেছে পাক সেনাবাহিনী। সেই ঐতিহ্য এখনও চলছে।

ওবামা বলেছেন, তিনি যখন আফপাক নীতি ঘোষণা করছেন, ঠিক সে সময়েই পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে হামলা চালানো হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানকে ক্যানসারের মতো আক্রমণ করেছে। সে জন্য অেস্ত্রাপচার প্রয়োজন। ওবামা মুখে বলেননি, কিন্তু, পাকিস্তানে অেস্ত্রাপচারের ব্যবস্থা তিনি করেছেন। আফগানিস্তানের পাশাপাশি পাকিস্তানেও যুদ্ধ চলবে। তবে, সেখানে আমেরিকান সৈন্য পাঠানো হবে না। সেখানে অদৃশ্য যুদ্ধ চালাবে সি আই এ। আর, আকাশপথে আক্রমণ করবে েড্রান বিমান।

আফগান যুদ্ধের পাশাপাশি পাকিস্তানেও যুদ্ধ চালানো হবে, কারণ, পাকিস্তানেই রয়েছে সন্ত্রাসবাদের মূল ঘঁাটি। ওবামা আফগানিস্তানের চেয়ে পাকিস্তানকে বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করছেন। কেননা, পাকিস্তানে রয়েছে পারমাণবিক অেস্ত্রর ভাণ্ডার। আলকায়েদা ও তালিবান ওই ভাণ্ডার দখল করতে পারলে বিেশ্বর পক্ষেই মহাবিপদ দেখা দেবে। আমেরিকা হবে আলকায়েদার প্রধান টার্গেট। তাই, ওবামা প্রশাসন আফগানিস্তান নিয়ে যতটা চিিন্তত, তার চেয়ে অনেক বেশি দুিশ্চিন্তত পাকিস্তান নিয়ে।

প্রেসিডেণ্ট ওবামা নতুন আফপাক নীতি ঘোষণা করায় পাকিস্তান ততোধিক দুিশ্চন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। পাকিস্তানের সামরিক কর্তারা ওবামার ঘোষণায় ক্ষুব্ধ। আফগানিস্তানে নতুন করে সৈন্য পাঠানোর বিরোধিতা করেছেন তঁারা। পাকিস্তানে সি আই এর কার্যবৃদ্ধিও তঁাদের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন।

তা ছাড়া, ওবামা বার বার বলেছেন, তিনি পাকিস্তানকে সাহায্য দানের পরিমাণ তিন গুণ বাড়াচ্ছেন বটে, কিন্তু ব্ল্যাক চেকে তিনি সই করবেন না। অর্থাৎ, তিনি যে সব শর্ত দিয়েছেন, পাকিস্তান তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে কি না, তা দেখে তিনি ডলার পাঠাবেন। নিশর্ত দান হবে না। আমেরিকা চোখ বুজেও থাকবে না।

তাই, আমেরিকার নতুন যুদ্ধ পরিকল্পনা শুধু আফগানিস্তানকে নিয়েই নয়, পাকিস্তানকেও সমানভাবে জড়িত করা হয়েছে ওই পরিকল্পনায়। এমনকী, আফগানিস্তানের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে।

আমেরিকার এই নয়া পরিকল্পনা ভেেস্ত দিতে পাকিস্তান নানা পরিিস্থতি সৃিষ্ট করতে পারে। চীনের সহযোগিতায় তারা ভারত সীমান্তকে উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। ভারতের বিরুদ্ধে চীনপাকিস্তানের যৌথ আক্রমণের কথা ভেবে ভারত সরকার উদ্বিগ্ন।

No comments: